আপনি কি আপনার শরীরকে সুস্থ করে চিরদিনের মত রোগমুক্ত হয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে চান তাও আবার কোন টাকা খরচ না করে তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গাতে এসেছেন.
আমরা আজকে জানবো নিচের বিষয়গুলি
1. গভীর শ্বাস কিভাবে খোজকে পরিষ্কার করে
2.গভীর শ্বাস সম্পর্কে কিছু বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষা এবং রিপোর্ট
3.গভীর শ্বাস নেওয়ার পর শরীরের এবং মনের মধ্যে কি কি জাদু ঘটে
4.গভীর শ্বাস নেওয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ পদ্ধতি
5. কারা এই অভ্যাস করতে পারবে এবং কারা পারবেনা.
গভীর শ্বাস কিভাবে কোশকে পরিষ্কার করে
আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষ কে ঘিরে আছে লসিকা, প্রতিটি কোষের উৎপাদিত দূষিত পদার্থ এবং মৃত কোষ.. এগুলি শরীর থেকে অপসারণ করতে সাহায্য করে লসিকা। এই লসিকাতন্ত্র সক্রিয় হয় শুধুমাত্র একটি পদ্ধতিতে তা হলো বা গভীর শ্বাস, এই দূষিত পদার্থ গুলি অপসারিত হলে তার রোগের বিরুদ্ধে লড়বার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়তে থাকে। এবং চেহারাতে একটি চমক আসে,যা কোনো দামি দামি ক্রিম মেখে আসে না.
গভীর শ্বাস সম্পর্কে কিছু বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষা এবং রিপোর্ট
পরীক্ষা নাম্বার ১
ক্যালিফোর্নিয়ার একজন লসিকা বিজ্ঞানী ডাক্তার জাকসিল্ড একটি মজার পরীক্ষা করেছিলেন ,তিনি এক ব্যক্তির শরীরের ভেতরে ক্যামেরা প্রবেশ করিয়ে দেখেছিলেন গভীর শ্বাস নেয়ার সময় লসিকতন্ত্র খুব দ্রুততার সাথে কোষ পরিষ্কার করতে থাকে পরে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে যদি গভীর শ্বাস নেওয়া ও ব্যায়াম করা হয় তবে কোষ থেকে দূষিত পদার্থ গুলি বের করার ক্ষমতা 15 গুণ বৃদ্ধি পায়। ভাবতে পারছেন কতটা উপকারী এই প্রক্রিয়া. যদি আপনি আপনার সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য কোন নিয়মই পালন না করেন তবে শুধুমাত্র গভীর শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস শুরু করুন। দশ দিনের মধ্যেই এর জাদু দেখতে পাবেন
পরীক্ষা নাম্বার ২
1953 খ্রিস্টাব্দে ডাক্তার গোল্ড ব্ল্যাট একটি গবেষণা প্রকাশ করেন তিনি এমন এক জাতির ইঁদুর নিয়েছিলেন যাদের মধ্যে কখনো ক্যান্সার বা টিউমার এর লক্ষণ দেখা যায়নি। তিনি ওই প্রজাতির নবজাতক ইঁদুরের কোষ সংগ্রহ করে তিনটি দলে ভাগ করেন. এই তিনটি দলের মধ্যে একটি দলের কোশকে একটি কাঁচের পাত্র রেখে ৩০ মিনিট অক্সিজেন বন্ধ করে দেয়. তিনি লক্ষ্য করেন কয়েক সপ্তাহ পরে অনেক কোষ মারা যায়,কিছু কোষের বিভাজন ধীরগতি হয়। এবং কিছু কোষের গঠন পরিবর্তন হয়ে ক্যান্সার কোষে পরিণত হয়। অন্য দুই দলের কোষ কে স্বাভাবিক অক্সিজেনেতে রাখা হয়. ৩০ দিন পর ওই তিনটি দলের কোষকে আবার ইঁদুরের শরীর প্রবেশ করান। 14 দিন পর দেখা যায় যেসব কোষ আগের মত স্বাভাবিক অক্সিজেন পেয়েছিল তাদের মধ্যে কোন পরিবর্তন হয়নি কিন্তু যেসব কোষ কে অক্সিজেন থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল তাদের শরীরে টিউমার দেখা যায় এবং এক বছর পরে ক্যান্সার কোষে পরিণত হয়. এই গবেষণাটি শেখায় অক্সিজেনের অভাব ক্যান্সার সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে .কোষ এর মধ্যে অক্সিজেন বাড়াবো কিভাবে? খুবই সহজ উত্তর গভীর শ্বাস নেওয়ার পদ্ধতিতে.
গভীর শ্বাস নেওয়ার পর শরীরের এবং মনের মধ্যে কি কি জাদু ঘটে
গভীর শ্বাস সম্পর্কে সম্পূর্ণ ডিটেইলস জানতে ভিডিওটি দেখুন
1.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
2.Stress & দুশ্চিন্তা নিমিষেই কমে যায়
3.মনোযোগ এবং ফোকাস বহুগুণ বেড়ে যায়
4.যারা পড়াশোনা করছেন বিশেষ করে কম্পিটিশন পরীক্ষা তাদের স্মরণ শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
5.মস্তিষ্ক থেকে ডোপামাইন ,অক্সিটোসিন ,সেরোটোনিন, এন্ডরফিন নামক হরমোন গুলি খুব ভাল ক্ষরণ হয়। ফলে ঘুম ভালো হয়।
6.রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রণে থাকে
7.হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভালো থাকে
8.এনার্জি বা শক্তি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়
9.মস্তিষ্ক কোষ সক্রিয় হয়
10.শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়লে শরীরের ফ্যাট দ্রুত গলতে থাকে ,ফলে অতিরিক্ত ওজন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
11.ত্বক এবং চেহারার চমক হতে থাকে
12.যৌন ক্ষমতা বহুগুণ বাড়ে
13.ডাইজেস্টিভ সিস্টেম বা পরিপাকতন্ত্রের কর্মদক্ষতা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়
14.খাওয়ার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে
15.শ্বাসকষ্ট রোগীদের জন্য ভীষণ উপকারী
গভীর শ্বাস সম্পর্কে সম্পূর্ণ ডিটেইলস জানতে ভিডিওটি দেখুন-Click here
গভীর শ্বাস নেওয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ পদ্ধতি
এবার আপনাদের মনে প্রত্যেকেই একটা প্রশ্ন জাগছে গভীর শ্বাস নেয়ার সঠিক পদ্ধতি কি ?আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি আপনারা বেশিরভাগ মানুষই সঠিক স্পদ্ধতি শোনেননি। আমি আপনাদের বলব শ্বাস নেওয়ার সবথেকে কার্যকারী উপায় যার দ্বারা সব থেকে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এটি হলো 1:4:2 অনুপাত.নাক দিয়ে শ্বাস নেব এক অনুপাত শ্বাস শরীরে ধরে রাখবো চার অনুপাত এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়বো দুই অনুপাত আরো সহজ ভাবে বলছি ধরুন আপনি তিন সেকেন্ড ধরে শ্বাস নাক দিয়ে নিচ্ছেন ১২ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখছেন এবং মুখ দিয়ে ছয় সেকেন্ড ধরে শ্বাস ছাড়ছেনআপনার ক্ষমতা অনুযায়ী ধীরে ধীরে এই অনুপাতের মান বাড়াতে থাকবেন সবথেকে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে 5,20,10শ্বাস নেওয়ার দ্বিগুণ সময় ধরে শ্বাস ছাড়া হয় এর বিজ্ঞানভিত্তিক কারণ হচ্ছে, এতে শরীরের সাথে পদার্থ গুলি শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এবং শ্বাস নেওয়ার চারগুণ সময় তার শরীরের ভেতরে রাখা হয় কারণ এতে লসিকা তন্ত্র সক্রিয় হয় এবং শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ে তাই এনার্জি লেভেল ও বাড়তে সাহায্য করে।..সারাদিনে কমপক্ষে তিনবার করবেন এবং প্রতিবারের দশবার করে করবেন.এই পদ্ধতিতে যা উপকার হবে তা কোন খাদ্য বা কোন ভিটামিন ট্যাবলেট খেলেও অত বেশি উপকার পাওয়া যাবে না।
কারা এই অভ্যাস করতে পারবে এবং কারা পারবেনা.
ডিপ ব্রিদিং একটি সাধারণ এবং প্রাকৃতিক অভ্যাস, যা বেশিরভাগ মানুষই করতে পারে। তবে কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক ও মানসিক পরিস্থিতিতে কিছু মানুষকে সতর্ক থাকতে হয়। নিচে সহজভাবে তালিকা দেওয়া হলো:
ডিপ ব্রিদিং কারা করতে পারবে (উপযুক্ত ব্যক্তিরা):
1.যারা স্ট্রেস ও মানসিক চাপ কমাতে চান
2.নতুনদের যারা মেডিটেশন বা মনঃসংযোগে অভ্যস্ত হতে চান
3.যারা ঘুমের সমস্যা, দুশ্চিন্তা বা প্যানিক অ্যাটাক থেকে মুক্তি চান
4.স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী যারা পরীক্ষার টেনশনে ভোগে
5.অফিসে বা কাজে সারাদিন মনোযোগ ধরে রাখতে চান এমন কর্মীরাযারা স্বাস্থ্যসচেতন এবং প্রতিদিন ৫-১০ মিনিট সময় দিতে পারেন
6.যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে কিন্তু ডাক্তার অনুমতি দিয়েছেন
কারা ডিপ ব্রিদিং না করাই ভালো (সতর্ক থাকবেন):
1.যাদের গুরুতর শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের সমস্যা আছে (যেমন: অ্যাজমা, COPD – চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া করবেন না)
2.গর্ভবতী নারীরা – নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট কৌশল প্রযোজ্য, তাই চিকিৎসকের অনুমতি প্রয়োজনযাদের মাথা ঘোরানো, বমিভাব বা ব্ল্যাকআউট হয় ডিপ ব্রিদিং করার সময়
3.যারা কোনো বড় অপারেশনের পর সেরে উঠছেনযারা একেবারে প্রথমে করেই Hyperventilation (অতিরিক্ত শ্বাস) করে ফেলে
4.নমানসিক রোগে আক্রান্ত যাদের Panic Disorder আছে, তাদের গাইডেড ব্রিদিং প্রয়োজনকারা এই অভ্যাস করতে পারবে এবং কারা পারবেনা.
উপসংহার
ডিপ ব্রিদিং প্রায় সকলের জন্যই উপকারী, তবে যদি আপনার কোনো রোগ থাকে বা শারীরিক সমস্যায় ভোগেন, তাহলে একজন চিকিৎসক বা প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে শুরু করা ভালো।
গভীর গভীর শ্বাস সম্পর্কে সম্পূর্ণ ডিটেইলস জানতে নিচের বইটি সংগ্রহ করতে পারেন-Click here